ঢাকা অফিস ॥ ক্ষমতাকে একচ্ছত্র করতে সরকার রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক কাঠামোকে বদলে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল সোমবার বিকেলে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এই অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আজকে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য জনগণের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে পুরো রাষ্ট্রের কাঠামোটাকে পরিবর্তন করে দিচ্ছে। এটা ভয়াবহ একটা অপরাধ যা ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে যে ভাবনা-আশা-আকাক্সক্ষা নিয়ে এবং রাষ্ট্রের যে চরিত্র আমরা নির্ধারণ করেছিলাম- গণতান্ত্রিক চরিত্র, সেই গণতান্ত্রিক চরিত্রকেই তারা পুরোপুরিভাবে বদলে দিতে শুরু করেছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই রাষ্ট্রের চরিত্র পরিবর্তন করার ক্ষেত্রে বিচার বিভাগ একটা বড় ভূমিকা পালন করেছে আর সেই সঙ্গে নির্বাচন কমিশনও একটা বিশাল ভূমিকা পালন করেছে।’ এই অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটাতে হলে রাজনৈতিকভাবে সমাধান আনতে হবে উল্লেখ মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একটা কথা সত্য যে, আইনগত দিক বলুন, আর সাংবিধানিক দিক বলুন এই সমস্যার সমাধান একমাত্র রাজনৈতিকভাবেই। সেই রাজনৈতিকভাবে সমাধান করতে হলে আজকে বাংলাদেশের মানুষের কাছে কোনো বিকল্প নাই এই ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট সরকারকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থেই জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা।’ বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সেজন্য আজকে যেটা বড় প্রয়োজন ঐক্য, জনগণের ঐক্য। সমস্ত রাজনৈতিক শক্তিগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করে, যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে তাদেরকে ঐক্যবদ্ধ করে আজকে আমাদেরকে একটা গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে, একটা গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে এই সরকারের পতন ঘটিয়ে সত্যিকার অর্থেই জনগণের একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠায় একটা দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। তার দিকনির্দেশনা নিয়ে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারবো এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে আমরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সচেষ্ট হবো। আমরা আশা করি, আগামী দিনগুলোতে সেই লক্ষ্যেই আমাদের সমস্ত কাজ, আমাদের শক্তি, আমাদের মেধাকে আমরা নিয়োগ করব।’ বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ অ্যান্ড কমিউনিকেশনস-বিএনআরসির উদ্যোগে ‘জাতীয় পরিচয়পত্র কার্যক্রম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে হস্তান্তরের সরকারি সিদ্ধান্ত: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণের ভোটের অধিকার পুনরায় লুণ্ঠনের এক নতুন ষড়যন্ত্র’ শীর্ষক এই ভার্চুয়াল আলোচনা সভা হয়। এতে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিহউল্লাহ। ভার্চুয়াল এই আলোচনায় প্রধান অতিথি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নীতিনির্ধারনী বক্তব্য দেন। বিএনআরসির পরিচালক বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদের পরিচালনায় আড়াই ঘণ্টার ভার্চুয়াল আলোচনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, নির্বাচন কমিশনের সাবেক সচিব আবদুর রশিদ সরকার ও ড. মোহাম্মদ জাকারিয়া, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান বক্তব্য দেন।
You cannot copy content of this page
Leave a Reply