ঢাকা অফিস ॥ দেশের সামুদ্রিক জলসীমায় ৬৫ দিন দেশের সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। গত বুধবার মধ্যরাত থেকে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে, আগামী ২৩ জুলাই পর্যন্ত চলবে এই নিষেধাজ্ঞা। এই সময়ে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করবে নৌবাহিনী, নৌ পুলিশ ও কোস্টগার্ড। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. ইফতেখার হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, বরিশাল, ভোলা, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে, পুলিশও সার্বিক সহায়তা করবে। এছাড়াও মাছ ধরার ট্রলারগুলো যেন ছেড়ে যেতে না পারে এবং বরফ কলগুলো বন্ধ রাখার বিষয়ে বিশেষ নজরদারি থাকবে। আর এ বিষয়ে সচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারণা ও সভা পরিচালনা করা হচ্ছে। তিনি আরও জানান, দেশের সামুদ্রিক জলসীমায় মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ এবং টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সামুদ্রিক মৎস্য আইন, ২০২০-এর ধারা ৩-এর উপধারা-২-এর ক্ষমতাবলে এ নিষেধাজ্ঞার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। গত ১৩ এপ্রিল এ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এই ৬৫ দিন সামুদ্রিক জলসীমায় যেকোনো প্রজাতির মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সমুদ্রে মাছ ধরা নিষিদ্ধকালে জেলেদের জন্য ১৬ হাজার ৭২১ মেট্রিক টন ভিজিএফ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। জানা গেছে, মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধকালে সরকারের মানবিক খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির আওতায় দেশের উপকূলীয় ১৪টি জেলার ৬৬টি উপজেলায় দুই লাখ ৯৮ হাজার ৫৯৫ জেলে পরিবারকে এ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রতিটি জেলে পরিবার প্রথম ধাপে (২০ মে থেকে ৩০ জুন ২০২১) মাসিক ৪০ কেজি হারে ৪২ দিনের জন্য মোট ৫৬ কেজি চাল পাবে। ভিজিএফ চাল ১০ জুনের মধ্যে যথানিয়মে উত্তোলন এবং নিবন্ধিত জেলেদের মধ্যে বিতরণ সম্পন্ন করার জন্য মঞ্জুরি আদেশে নির্দেশনা দেয়া হয়। কার্ডধারী জেলে ছাড়া অন্য কাউকে এই ভিজিএফ প্রদান করা যাবে না। বরাদ্দপ্রাপ্ত উপজেলাগুলো হলো- খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা, দাকোপ, পাইকগাছা, কয়রা, ডুমুরিয়া, দিঘলীয়া ও রূপসা, বাগেরহাট জেলার মোংলা, মোড়েলগঞ্জ ও শরণখোলা, সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি ও শ্যামনগর, চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী, আনোয়ারা, মীরসরাই, সন্দ্বীপ, কর্ণফুলী, চট্টগ্রাম মহানগর ও সীতাকু-, কক্সবাজার জেলার সদর, চকরিয়া, মহেশখালী, উখিয়া, পেকুয়া, কুতুবদিয়া, টেকনাফ ও রামু, নোয়াখালী জেলার হাতিয়া, সদর, সুবর্ণচর ও কোম্পানীগঞ্জ, ফেনীর জেলার ফুলগাজী। এছাড়া বরাদ্দ পেয়েছে- লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি, সদর, কমলনগর ও রায়পুর, বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জ, বাকেরগঞ্জ, হিজলা, সদর ও উজিরপুর, ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর, বরগুনা জেলার সদর, পাথরঘাটা, আমতলী ও তালতলী, পিরোজপুর জেলার সদর, মঠবাড়িয়া, ভান্ডারিয়া, নাজিরপুর, নেছারাবাদ, কাউখালি ও ইন্দুরকানি, পটুয়াখালী জেলার সদর, কলাপাড়া, বাউফল, গলাচিপা, রাঙ্গাবালি ও দশমিনা এবং ভোলা জেলার সদর, বোরহানউদ্দিন, চরফ্যাশন, দৌলতখান, লালমোহন, তজুমুদ্দিন ও মনপুরা।