ঢাকা অফিস ॥ দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় (গত বুধবারসকাল ৮টা থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা) ডেঙ্গুতে শনাক্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩৬ জন। আর তাদের সবাই ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গতকাল বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম এ তথ্য জানায়। কন্ট্রোল রুম জানায়, দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১৫১ জন রোগী। তাদের মধ্যে রাজধানী ঢাকার সরকারি ও বেসরকারি ৪১টি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ১৪৯ জন আর ঢাকার বাইরের হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন দুইজন। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৮ জুলাই পর্যন্ত ৬০১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন আর চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৪৫০ জন। কন্ট্রোল রুম জানায়, চলতি বছরে মোট ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হওয়া ৬০১ জনের মধ্যে কেবল চলতি জুলাই মাসের ৮ জুলাই পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছেন ২৩০ জন। এর আগে জানুয়ারি মাসে শনাক্ত হয়েছেন ৩২ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৯ জন, মার্চে ১৩ জন, এপ্রিলে তিনজন, মে মাসে ৪৩ জন আর জুন মাসে ২৭১ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এখনও ডেঙ্গুতে কোনও রোগীর মৃত্যু হয়নি বলে জানালেও গত বুধবারও রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সাঈদা নাসরীন বাবলী। এদিকে, ডেঙ্গু নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তাই কারও জ¦র হলে করোনা পরীক্ষা করানোর পাশাপাশি ডেঙ্গু পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিয়েছে অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম জানিয়েছেন, কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে কারও যদি জ¦র থাকে তাহলে কোভিড পরীক্ষার পাশাপাশি ডেঙ্গুর পরীক্ষা করাতে হবে। সারা দেশে সিভিল সার্জনদের কাছে পর্যাপ্ত এনএস-১ কিট সরবরাহ করা হয়েছে। উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত পরীক্ষা করানো সম্ভব হবে। প্রসঙ্গত, চিকিৎসকরাও বলছেন, ঢাকায় ডেঙ্গু বেড়ে চলেছে। করোনার এই সময়ে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা কেউ বুঝতে পারছে না। নীরবেই বাড়ছে। এখনই নজর দেওয়া না হলে পরিস্থিতির অবনতি হবে। এর আগেও করোনার মধ্যে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের কথা স্বীকার করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জরিপের তথ্য মতে, নির্মাণাধীন ভবনের জমে থাকা পানি, প্লাস্টিকের ড্রাম, বালতি, পানির ট্যাংক, বাড়ি করার জন্য নির্মিত গর্ত, টব, বোতল ও লিফটের গর্তে এডিস মশার লার্ভা বেশি পাওয়া গেছে। তাই এসব জায়গাগুলোতেও নজরদারি বাড়াতে হবে। জরিপে রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের মধ্যে মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোড, লালমাটিয়া, সায়েদাবাদ এবং উত্তর যাত্রাবাড়ী এলাকায় এডিসের লার্ভা বেশি পাওয়া গেছে বলেও জানিয়েছে অধিদপ্তর।
You cannot copy content of this page
Leave a Reply