কুমারখালী প্রতিনিধি ॥ ‘বিকট শব্দে আমার ঘুম ভেঙে যায়। উপরে তাকায়া দেখি ফ্যানে ( বৈদ্যুতিক পাখা), কাপুড়ের সামিয়ানা ও চালে আগুন। তখন জোরে চিৎকার করে ১০ মাসের বাচ্চা নিয়ে দৌড়ে চলে যায়। ‘কাঁন্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন কুমারখালী উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের চৌরঙ্গী বাজার এলাকার রিনা খাতুন (৩০)। গতকাল সোমবার (২২ এপ্রিল) বিকেল পৌণে তিনটার দিকে রিনার কৃষক বাবা আতিয়ার রহমানের বসতঘরে বৈদ্যুতিক শর্ট শার্কিট থেকে আগুন লাগে। এতে ঘরে থাকা নগদ টাকা, টিভি, ফ্রিজ, আসবাবপত্রসহ টিনের চালা পুড়ে যায়। এছাড়াও বসতবাড়ির আগুন ছড়িয়ে পড়ে বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী আহমেদ আলী মন্টুর (৪০) গুদামঘরে। ছড়িয়ে পড়া আগুনে তার প্রায় ১২০ মণ পেঁয়াজ পুড়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ক্ষতিগ্রস্থদের ভাষ্য, বৈদ্যুতিক ফ্যান থেকে আগুনের সুত্রপাত ঘটে। স্থানীয়রা ও ফায়ার সার্ভিসের প্রায় এক ঘণ্টা চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে ততক্ষণে নগদ টাকা, আসবাবপত্র, পেঁয়াজসহ প্রায় পাঁচ থেকে সাত লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতির ধারণা করা হচ্ছে। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, উৎসুক জনতার ভিড়। ঘরের বাঁশের আড়াই ঝুলছে পোড়া ফ্যান। চালে পোড়ার ক্ষত। মেঝেতে পোড়া আসবাবপত্র ও পেঁয়াজ। বাতাসে ভাসছে পোড়া গন্ধ। এসময় কৃষক আতিয়ার রহমান (৬৫) জানান, প্রথমে খাঁচি ফ্যানে আগুন লাগে। এরপর সামিয়ানা, চাতাল ও চালে। পরে ঘরের আসবাবপত্র ও পেঁয়াজের গুদামে। তাঁর ভাষ্য, অগ্নিকান্ডে নগদ ৭২ হাজার টাকা, টিভি, ফ্রিজসহ তাঁর প্রায় চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে। তিনি সরকারের কাছে সহযোগীতা চান। পাশেই ভাঙা মনে দাঁড়িয়ে ছিলেন ব্যবসায়ী আহমেদ আলী মন্টু। তাঁর চোখে-মুখে দুঃখের ছাপ। তিনি জানান, বসতঘরের আগুন ছড়িয়ে পড়ে তাঁর গুদামঘরে। এতে তাঁর ১২০ মণ মজুদ রাখা পেঁয়াজ পুড়ে গেছে। যার বাজার মূল্য প্রায় দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা। কুমারখালী ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আব্দুস সাত্তার জানান, খবর পেয়ে তাঁরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছান এবং এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন। ততক্ষণে ঘরের চালা, আসবাবপত্র ও প্রায় ১২০ মণ পেঁয়াজ পুড়ে যায়। প্রাথমিকভাবে তিনি ধারণা করছেন বৈদ্যুতিক শর্ট শার্কিট থেকে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমান তদন্ত করে পরে জানাবেন বলে জানান তিনি।