1. admin@andolonerbazar.com : : admin admin
  2. andolonerbazar@gmail.com : AndolonerBazar :

কুষ্টিয়ায় শেষ সময়ে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা; কমেছে ভারতীয় পন্যের বেচাকেনা

  • সর্বশেষ আপডেট : মঙ্গলবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৪

 

নিজ সংবাদ ॥ ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে খুশি। আর এ দুই তখনই আত্মতৃপ্তি পাই, যখন নতুন পোশাক পরে ঈদগাহ ময়দানে যায় ধর্মপ্রান মুসল্লিরা। এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই পরিবারের নারী সদস্যরাও। এছাড়াও ছোট বড় সকলে একই আনন্দে আনন্দিত। আর এই আনন্দকে ভাগাভাগি করতে কুষ্টিয়া মার্কেটগুলোতে ঈদ মার্কেট করতে নেমেছে ধনী গরিব সকল শ্রেনী পেশার মানুষ। আর তাই শেষ সময়ে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা। ব্যস্ত সময় পার করছে দোকানীরা। বাহারী সব পন্যের পসরা সাজিয়ে বসে আছে ব্যবসায়ীরা। এই ঈদ বাজারে রোজার প্রথম দিকে কেনাকাটা তেমন ধুম না পড়লেও ১৫ রোজার পর থেকে বেচাকেনা বেড়েছে। তবে এক সময়ের বাজার দখলকারী ভারতীয় পন্যের বাজারে ধস নেমেছে। সম্প্রতি ভারত বিরোধী প্রচারনাই  যার মুল কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। যার কারনে এবার ঈদে ভারতীয় পন্যের বাজার ৫০% কমেছে বলে দাবী সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের। এখন ভারতীয় বেনারশি কাতান শিল্ক শাড়ীর পরিবর্তে ঈদের বাজার দখল করেছে দেশীয় পন্য ও পাকিস্তানীসহ অন্যান্য দেশের পন্য। এবারের ঈদ বাজার অন্যান্য বারের তুলনায় আলাদা। বিগত বছরগুলোতে ক্রেতাদের পছন্দ ও চাহিদার কারণে ভারতীয় পণ্য ছিল পছন্দের শীর্ষে। তবে এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতারা ভারতীয় পণ্য কিনছেন না। এর পাশাপাশি বাজারে ভারতীয় পণ্য বয়কটের প্রভাবও পড়েছে। বিশেষ করে ভারতীয় শাড়ি ব্যবসায় এবার ধস নেমেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আর্থিক অবস্থা খারাপ থাকার কারণে এবার মধ্যবিত্তরা ঈদের বাজারে ব্যাপক সংখ্যায়  আসেনি। রোজার মাসের শেষ সময়ে কেনাকাটায়ও এই শ্রেণীর লোকজনকে দেখা যাচ্ছে না। ব্যবসায়ীদের জন্য এটাই সবচেয়ে খারাপ খবর। দেশের সবচেয়ে বড় জনগোষ্ঠী মধ্যবিত্ত, তারা এখন ঈদের বাজারে অনুপস্থিত। যে কোনো দেশের বিশাল জনগোষ্ঠী মধ্যবিত্তদের কেনাকাটায় টিকে থাকে ব্যবসায়ীরা। দোকানিদেরও খরচ উঠে আসে না এমনটা হলে। তবে ভালো খবর হচ্ছে নিন্নবিত্তরা ফুটপাতের বাজারে যাচ্ছে। কারণ সীমিত আয়ের নিম্নবিত্তদের শপিংমলে গিয়ে বেশি খরচ করার ক্ষমতা নেই। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা শাড়ির ব্যবসায়। বাংলাদেশে বিশেষ করে ভারতীয় শাড়ির ব্যবসায় একেবারে ধস নেমেছে। গুজরাট এবং রাজস্থানের শাড়ি বাধনি, লক্ষ্ণৌ শাড়ি চিকন,  রাজস্থান শাড়ি কাটা দারিয়া, বারানসীর তাঁত জামদানি শালু, বেনারসি বিক্রি নাই বললেও ভুল হবে না। এমনিতেই শাড়ি পরা মহিলাদের সংখ্যা কমে গেছে। কারণ বেশিরভাগই সালোয়ার কামিজ পরতে সাচ্ছন্দ্য বোধ কর। শাড়ি কেউ পড়তে চায় না। শাড়ি পড়া তো ঝামেলাও। শতাংশ হারে শাড়ি পরা মহিলাদের সংখ্যা ২০ শতাংশ কমেছে। অপরদিকে কুষ্টিয়া শহরের এনএস রোড, বঙ্গবন্ধু মার্কেট, লাভলী টাওয়ার,  পরিমল টাওয়ার ,তমিজ উদ্দিন মার্কেট, হাইস্কুল মার্কেট, ইসলামিয়া কলেজ মার্কেটসহ বিন্নি মার্কেটগুলো উপচেপড়া ভীড় লক্ষ্য করা গেছে। ছোটবড় ছেলে মেয়েসহ সব বয়সের মানুষগুলো ঈদ কেনাকাটায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। মার্কেটগুলো ঘুরে দেখা যায়, রেডিমেট পাঞ্জাবি  ৬০০ থেকে শুরু করে ২৫০০টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এই ঈদে বেশি বিক্রি হচ্ছে ভারতের পাঞ্জাবী। যা ২০০০ থেকে ২৫০০টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। গতবারের চেয়ে এবার এগুলো বেশি চলছে। অপরদিকে গত ঈদে মেয়েদের পাগল করা থ্রীপিচ পাখি ছাড়াও অন্যান্য বিভিন্ন নামের থ্রীপিচ গুলো এবার না চললেও নতুন নামে মার্কেট দখল করেছে নাইরা, যোরা, সারারা গাউন থ্রীপিচ। বড় মেয়েদের ভারতের এই গাউন থ্রীপিচগুলো বিক্রি হচ্ছে ৩৫০০ থেকে ৪০০০হাজার টাকায়। আর শাড়ী এবং লুঙ্গির জগতে রয়েছে অন্য কথা। এগুলো এককালিন বেশিরভাগ যাচ্ছে যাকাতের কাপড় হিসেবে। তবুও খুচরা বিক্রিতে পিছিয়ে নেই। শহরের এনএস রোডের  হাইস্কুল মার্কেটের সাইমা শাড়ী এন্ড থ্রীপিচ ঘরে গিয়ে দেখা যায়, দেশীয় পন্য পাকিজা প্রিন্ট শাড়ী বেশি চলছে। এর দাম রাখা হচ্ছে ৬০০ থেকে ৭৫০ টাকা।  আর যে কাপড়ের জুড়ি নেই তা হলো সুতি টাঙ্গাইল শাড়ী বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ২০০০টাকা পর্যন্ত। তবে এখানে ভাববার বিষয়, তা হলো ভারতীয় শাড়ী নাকি আর চলছে না।  অপরদিকে বেনারশি কাতান শিল্ক শাড়ী দাম হাকানো হচ্ছে ১৩০০ থেকে ৫০০০টাকা পর্যন্ত। অন্যদিকে পুরুষদের বোট শার্ট, ওয়াশ শার্ট বিক্রি হচ্ছে বেশি। যেগুলো ৮০ থেকে ১০০০টাকায় বিক্রি করছেন দোকানীরা। এছাড়া বাচ্চাদেও জিন্স প্যান্ট, থ্রী কোয়ার্টার প্যান্ট, গেঞ্জি, শার্ট পাওয়া যাচ্ছে ৪০০ থেকে ১৪০০ টাকায়।  অপরদিকে জুতা স্যান্ডেলের দোকানগুলোতেও জোরে সোরে চলছে বেচাকেনা।দোকানগুলোতে পুরুষদের বিভিন্ন ধরনের সু বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ২০০০টাকা পর্যন্ত । পাশাশি বাচ্চাদের দেশী ও চায়না স্যান্ডেল বিক্রি জচ্ছে ৫০০ থেকে ১৮০০ টাকা পর্যন্ত। তবে চায়না স্যান্ডেল বেশি চলে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। আর মেয়েদের নাগরা হীল বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ১২০০টাকায়। লেডিস চটি চায়না বেল্ট স্যান্ডেলের চাহিদাও বেশ কম নয়। ৬০০ থেকে ১২০০ টাকায় বেচাকেনা হচ্ছে এই স্যান্ডেলগুলো। আর সাকসেস বেল্ট, চটি  বেল্ট বেশি চলছে। এছাড়া কসমেটিকসের দোকানগুলোতে ভীড় লক্ষ্য করা গেছে। এসব দোকানগুলোতে বিভিন্ন প্রসাধনী নানা দামে বিক্রি হচ্ছে। পাশাপশি বেডশীটসহ নানা পণ্যের দোকানগুলোতে ভীড় করছে মানুষ। কারন ঈদ আসলে অনেকেই নিজের ঘর সাজানোকে পছন্দ করে। শহরের এনএস রোডের পরিমল টাওয়ারে কেনাকাটা করতে আসা আব্দুর রহিম নামে এক চাকুরিজীবী বলেন, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কেনাকাটা করতে এসেছি। অনেক কিছুই কিনবো। নিজের জন্য জামা প্যান্ট পছন্দ করছি। সন্তনের জন্য পোশাক দেখছি। স্ত্রীর জন্য শাড়ী ও থ্রীপিচ কিনছি।  পাশাপশি পরিবারের সকলের জন্য কমবেশি কেনাকাটা করবো। তবে দাম সবকিছুর দাম বেশি। তবুও কিনতে হবে। উপায় নেই। এনএস রোডের হাইস্কুল মার্কেটের ফ্যাশন স্টাইল গার্মেন্টসের মালিক হোসেন আলী বলেন, দেশীয় পণ্যের পাশাপাশি ভারতীয় পণ্যের বাজার এখনও রয়েছে। তবে সীসিত। ভারতীয় পোশাকের উপর মানুষের চাহিদা কমেছে। কেনাকাটায় মহিলা কাস্টমার বেশি আসছে। ১৫ রোজার পর থেকে মূলত বেচাকেনা শুরু হয়েছে। চাদ রাত পর্যন্ত চলবে বেচাকেনা। শেষ সময়ে এসে মানুষ বেশি কেনাকাটা করছে। ব্যবসা অনেকটা বেড়েছে। প্রতিদিন প্রায় এক থেকে দেড় লাখ টাকা বিক্রি হচ্ছে। শহরের তন্ময় প্রসাধনির মালিক বাবুল আজাদ বলেন, গতবারের চেয়ে এবার বেচাকেনা কম হচ্ছে। সাধারন মানুষ মনে হয় অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছে। তবে ভারতীয় পন্যের দখল কমেছে। নামী দামী কসমেটিকস পন্যে সেল কমেছে।

Please Share This Post in Your Social Media

আরো খবর
© All rights reserved ©2021  Daily Andoloner Bazar
Site Customized By NewsTech.Com