খোকসা প্রতিনিধি ॥ কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় জুঁই খাতুন (১৯) নামের এক গর্ভবতী গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। জুঁই খাতুন খোকসা উপজেলা নিচিন্তবাড়িয়া দক্ষিণ পাড়া গ্রামের শামসুল আলম এর স্ত্রী। দুই পরিবারের সম্মতিতে এক বছর আগে ৫০,হাজার টাকা যৌতুকের বিনিময় জুঁই খাতুন ও শামসুল আলম এর বিবাহ হয়। ছোট বোন সাদিয়া খাতুন বলেন, মাঝে মধ্যেই আমি আপাদের বাড়িতে বেড়াতে যায়। আপুর সাথে খারাপ ব্যবহার করত। প্রায়ই আপুর শাশুড়ি নির্যাতন করত।আপুকে নিয়মিতভাবে খাবার দিত না। আমি আমার আপুর মৃত্যুর সঠিক বিচার চাই বলে কান্নায় ভেঙে পড?েন। প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জুই খাতুন ছোটবেলা থেকেই মামাবাড়িতে বড় হয়েছে। ছোটবেলা থেকে মামা বাড়ির স্নেহ ভালবাসায় তিনি বড় হয়েছে। এখান থেকেই তার বিবাহ হয়। মামাবাড়ি সূত্রে জানা যায় , মেয়ের মা বাবা রংপুর বসবাস করেন। মা বাবার সম্মতিক্রমে তার ওখানে বিবাহ দেওয়া হয়। দীর্ঘদিন যাবত মেয়েটি বিভিন্ন অসুবিধায় স্বামীর বাড়িতে সংসার করছিল। নির্যাতনের পরও মেয়েটি কোন কথা বলেনি শুধু কান্নাই করে গেছে। গতকাল যখন অসুস্থ হয় খোকসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বিকেলে ভর্তি করেন । তবুও আমাদের কে কোন খোঁজ খবর দেয়নি। মৃত্যুর পরেই আমাদের খোঁজখবর দেন। তাই মৃত্যুটি রহস্যজনক বলে মনে হয়। গৃহবধূর শাশুড়ি লিপি খাতুন বলেন ,আমার বৌমা যখন বমি করছিল তখন আমরা সাথে সাথেই খোকসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নিয়ে যায়। বিকেলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসারত ডাক্তার তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। দীর্ঘ সময় চিকিৎসার পর আমার বৌমা প্রায় সুস্থ হয়ে যায়। রাত তিনটার দিকে অসুস্থ হলে পুনরায় ডাক্তার চিকিৎসা দেয়। তারপর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তবে মৃত্যুর সময় আমার ছেলে বাড়িতে ছিলেন। এদিকে প্রাথমিক পর্যায়ে খোকসা থানায় মৌখিক অভিযোগ হলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন । ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশ অফিসার এস এম মেহেদীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন প্রাথমিকভাবে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট করা হয়েছে। তবে নির্যাতনের কোন আলামত পাওয়া যায়নি। তবে ঘটনাস্থলে দেখা যায় বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সহ উভয়পক্ষের পরিবারের মধ্যে সমঝোতা হয়। তারপরেই শ্বশুরবাড়ি থেকে গৃহবধূর লাশটি খোকসা জয়ন্তীহাজরা ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামে মামার বাড়িতে আনা হয়। মামার বাড়িতে এনে লাশের দাফন সম্পন্ন হয়। তবে ময়না তদন্ত ছাড়াই লাশ দাফন করা হয়েছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, মেয়েটির অতিরিক্ত বমি হচ্ছিল। চিকিৎসা দেওয়ার একপর্যায়ে মেয়েটি ভালো ছিল। তবে রাত্রে রুগীটি অবনতি হলে পুনরায় চিকিৎসা দেওয়া হয়। সে সময় চিকিৎসা দেওয়ার এক পর্যায়ে মেয়েটি হার্ট অ্যাটাক মৃত্যুবরণ করে এই মর্মে হাসপাতাল থেকে মেয়েটির মৃত্যুর সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে । এ বিষয়ে সুধী সমাজের দাবি এই মৃত্যুর সাথে রহস্য গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে তাই বিষয়টি তদন্তকরা প্রয়োজন।