ঢাকা অফিস ॥ গাজায় গত পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলের অভিযানে ১৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি শিশু নিহত হয়েছে বলে রোববার জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ। শুধু তাইই নয়, গাজায় বহু শিশু চরম অপুষ্টিতে ভুগছে। তারা এতটা দুর্বল হয়ে পড়েছে যে ‘তাদের এমনকি কান্না করার মত শক্তিও নেই’। রোববার সিবিএস নিউজ এর ‘ফেস দ্য নেশন’ অনুষ্ঠানে ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথেরিন রাসেল বলেন, “আরও হাজার হাজার শিশু আহত হয়েছে অথবা আমরা এমনকি বুঝতেও পারছি না তারা আসলে কোথায়। হতে পারে তারা ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছেৃআমরা বিশ্বে আর কোনো যুদ্ধে এত শিশুর মৃত্যু হতে দেখিনি। “আমি হাসপাতালে শিশুদের এমন এমন ওয়ার্ড দেখেছি যেখানে থাকা শিশুরা মারাত্মক রক্তশূন্যতা জনিত অপুষ্টিতে ভুগছে। পুরো ওয়ার্ডে পিনপতন নিরবতা বিরাজ করছে। কারণ, শিশুরা, ছোট্ট ছোট্ট ওই বাচ্চাগুলোরৃএমনকি কাঁদবার মত শক্তিটুকুও তাদের শরীরে অবশিষ্ট নেই।” গাজায় ত্রাণের ট্রাক প্রবেশ এবং ত্রাণ বিতরণে ‘খুবই কঠিন আমলাতান্ত্রিক জটিলতা মোকাবেলা’ করতে হয় বলেও জানান জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা। গাজায় এত মৃত্যু, অনাহার, খাদ্য সংকট পরিস্থিতির জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করা হচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশটির সমালোচনা তীব্র হচ্ছে। অভিযোগ আছে, ইসরায়েল গাজায় ত্রাণ প্রবেশ ও বিতরণে বাধা দিচ্ছে। এ মাসের শুরুতে জাতিসংঘের একজন বিশেষজ্ঞ বলেছেন, “ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের অনাহারে রেখে তিলে তিলে শেষ করতে চায়। এর অংশ হিসেবে দেশটি গাজার খাদ্য ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিচ্ছে।” ইসরায়েল অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ইসরায়েলের অভিযানে গাজার ২৩ লাখ মানুষের সবাই গৃহহীন হয়ে পড়েছে। পাঁচ মাসের যুদ্ধে সেখানে ৩১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। নিহতের একটি বড় অংশ নারী ও শিশু। ছোট্ট এই ভূখ-টিতে চরম খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। হাজার হাজার শিশু চরম অপুষ্টিতে ভুগছে। অপুষ্টিতে ভুগে প্রায় প্রতিদিনই সেখানে শিশুরা মারা যেতে শুরু করেছে। গাজায় ‘দুর্ভিক্ষ আসন্ন’ বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ এবং বিশ্ব খাদ্য প্রকল্প (ডব্লিউএফপি)।