ভেড়ামারা প্রতিনিধি ॥ মশাময় নগরী ভেড়ামারা। মশার উৎপাত ভেড়ামারা নগরীর মানুষ এখন ডেঙ্গু শঙ্কায় ভুগছেন। ঘরে-বাইরে সবখানেই রক্তচোষা এই প্রাণীটির দাপট। কোথাও বসে থাকা কিংবা দাঁড়িয়ে থাকার জো নেই। মশা তাড়াতে অ্যারোসোল, কয়েল বিষাক্ত সব উপকরণই ব্যর্থ হচ্ছে। ভেড়ামারা নগরী যেন এক মশাময় নগরীতে পরিণত হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মশার মাধ্যমে ম্যালেরিয়া, ফাইলেরিয়া, ডেঙ্গুসহ বিভিন্ন রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা থাকে। মশা নিধনে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে ডেঙ্গুর চিকিৎসা ব্যবস্থায় সংকট আরো গভীর হতে পারে। নগরবাসীর অভিযোগ, মশার ওষুধ ঠিকমত ছিটানো হচ্ছে না। শুধু নালা পরিষ্কারেই ব্যস্ত পৌরসভা। নগরীর তালতলার বাসিন্দা বোরহান উদ্দিন বলেন, কয়েল জ্বালিয়ে, অ্যারোসোল ¯েপ্র করে ব্যর্থ হয়ে মশারি টাঙিয়ে বসতে হয় প্রতিদিন। মশার কামড়ে পরিবারের সকলেই ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হই কি-না সেই ভয়ে বসবাস করছি। এলাকায় অনেকদিন যাবত মশার ওষুধ ছিটাতে দেখিনি। মঠপাড়া এলাকার বাসিন্দা মিন্টু বিশ্বাস বলেন, আমার বাড়িতে সন্ধ্যার আগেই ঘরে সব দরজা-জানালা বন্ধ করে দেই। তারপরও মশা থেকে রক্ষা পাচ্ছি না। কিছুতেই মশা কমছে না মশা মারতে কয়েল, অ্যারোসল, মশা তাড়ানোর বৈদ্যুতিক যন্ত্র বাড়িতে কোনো কিছুর কমতি নেই। কিন্তু কিছুতেই মশা কমছে না। রাতে খাওয়ার সময় ডাইনিংয়ের নিচে কয়েল দিয়ে রাখতে হয়। বাসার কোথাও বসে একটু জিরোবার উপায় নেই। সকাল-সন্ধ্যা, রাত সব সময় প্রায় একই অবস্থা। মশা তো কমে না। ভেড়ামারায় মশা কমছে না কেন কীটতত্ত্ববিদেরা বলেন, দেশে প্রায় ১২৩ প্রজাতির মশা আছে। এর মধ্যে ১৬ প্রজাতির মশার প্রকোপ বেশি। দেশের বিভিন্ন স্থানে বছর জুড়ে যে কয়েক প্রজাতির মশা থাকে, এর মধ্যে কিউলেক্স ৯৫ শতাংশের বেশি। কিউলেক্স মশার কামড়ে গোদ ও নানা ধরনের চর্মরোগ হতে পারে। ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা ডা. মিজানুর রহমান বলেন, এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া হয়। ফলে মশা নিয়ন্ত্রণ খুবই জরুরি। ঔষধ ছিটানোর পাশাপাশি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যবস্থায় সজাগ থাকতে হবে নগরবাসীকেও। কারণ বর্ষা মৌসুমে এডিস মশার উৎপত্তি ঘটে পরিষ্কার পানিতে। তাই নিজের বাড়ির আঙ্গিনা ও আশপাশ নিজেদেরই পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। মশামুক্ত নগরী গড়তে হলে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।