1. admin@andolonerbazar.com : : admin admin
  2. andolonerbazar@gmail.com : AndolonerBazar :

প্রধানমন্ত্রী ও কাতার আমিরের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক, ১০ চুক্তি-সমঝোতা স্মারক সই

  • সর্বশেষ আপডেট : মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪

 

ঢাকা অফিস ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কাতার আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠক শেষে পারস্পরিক বিনিয়োগ উন্নয়ন ও সুরক্ষা এবং দ্বৈতকর পরিহারসহ বাংলাদেশে ও কাতারের মধ্যে পাঁচটি চুক্তি ও পাঁচটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের করবী হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল সানির উপস্থিতিতে এসব চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হয়। পাঁচ চুক্তির মধ্যে আছেÑ উভয় দেশের পারস্পরিক বিনিয়োগ উন্নয়ন ও সুরক্ষা সংক্রান্ত চুক্তি, দ্বৈতকর পরিহার ও কর ফাঁকি সংক্রান্ত চুক্তি, আইনগত বিষয়ে সহযোগিতা সংক্রান্ত চুক্তি, সাগরপথে পরিবহন সংক্রান্ত চুক্তি এবং দু’দেশের ব্যবসা সংগঠনের মধ্যে যৌথ ব্যবসা পরিষদ গঠন সংক্রান্ত চুক্তি। পাঁচ সমঝোতা স্মারকের মধ্যে আছেÑ কূটনৈতিক প্রশিক্ষণে সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক, উচ্চশিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক, যুব ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক, শ্রমশক্তির বিষয়ে সমঝোতা স্মারক এবং বন্দর ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক।

চুক্তিগুলোর মধ্যে প্রথমটিতে কাতারের পক্ষে বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন হামাদ আল সানি ও বাংলাদেশের পক্ষে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, দ্বিতীয়টিতে কাতারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সুলতান বিন সাদ আল মুরাইখি ও বাংলাদেশের অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান, তৃতীয়টিতে কাতারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সুলতান বিন সাদ আল মুরাইখি ও বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, চতুর্থটিতে কাতারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সুলতান বিন সাদ আল মুরাইখি ও বাংলাদেশের নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এবং পঞ্চমটিতে কাতার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির চেয়ারম্যান শেখ খলিফা বিন জসিম আল থানি ও বাংলাদেশের ফেডারেশন অব চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম সই করেন।

সমঝোতা স্মারকগুলোর মধ্যে সব কটিতে কাতারের পক্ষে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সুলতান বিন সাদ আল মুরাইখি এবং বাংলাদেশের পক্ষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, যুব ও ক্রীড়া, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা সই করেন। এর আগে মঙ্গলবার সকাল সোয়া ১০টার পর রাজধানীর তেঁজগাওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শিমুল হলে দ্বিপাক্ষিকে বৈঠকে বসেন কাতারের আমির ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সকাল সোয়া ১০টার দিকে কাতার আমির কার্যালয়ে পৌঁছালে টাইগার গেটে তাকে ফুল দিয়ে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান প্রধানমন্ত্রী। দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর গ্লোব হলে ফটোসেশনে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও কাতারের আমির শেখ তামিম। এরপর কার্যালয়ের চামেলী হলে দুদেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন দুই দেশের নেতা। বৈঠকগুলোতে দুই দেশে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের পাশাপাশি ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের ফলে সৃষ্ট মধ্যপ্রাচ্যের বিশেষ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের আমন্ত্রণে বঙ্গভবনের দরবার হলে মধ্যাহ্ন ভোজে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে কাতারের আমিরের। এরপর বিকাল ৩টায় নিজের নামে নামকরণ হওয়া ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতাধীন মিরপুরের কালশী এলাকায় বালুর মাঠে নির্মিতব্য পার্ক ও মিরপুর ইসিবি চত্বর থেকে কালশী উড়াল সেতু পর্যন্ত সড়ক উদ্বোধন করবেন তিনি। সন্ধ্যায় বিশেষ বিমানে কাতারের উদ্দেশ্যে যাত্রা করার কথা রয়েছে আমিরের। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাকে বিমানবন্দরে বিদায় জানাবেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে দুই দিনের সফরে সোমবার বিকালে ঢাকায় এসেছেন কাতারের আমির। বিকাল পাঁচটায় সফরসঙ্গীদের নিয়ে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান তিনি। চলতি বছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের নতুন সরকার গঠনের পর মধ্যপ্রাচ্যের কোনো দেশ থেকে এটিই প্রথম উচ্চপর্যায়ের সফর। আমিরের ঢাকা সফরকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ। বিমানবন্দরে তাকে লাল গালিচা অভ্যর্থনা জানানো হয়েছে। আমিরকে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন। বিমানবন্দরে আমিরের অবতরণের সময় ২১বার তোপধ্বনি করা হয়। বঙ্গবন্ধুর সরকারকালীন ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়া অন্যতম মুসলিম রাষ্ট্র কাতার। প্রধানমন্ত্রীর বিগত ২০২৩ সালের মার্চ ও মে মাসে দুবার কাতার সফরের মাধ্যমে উভয় দেশের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক সুদৃঢ় অবস্থানে উপনীত হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় কাতারের আমিরের এ সফর। ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান এবং কূটনৈতিক মধ্যস্থতার কারণে কাতার মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী দেশ হিসেবে পরিচিত। আরবের এ দেশ বাংলাদেশের অন্যতম শ্রমবাজারও, যেখানে প্রায় ৪ লাখ বাংলাদেশি কাজ করছেন। পেট্রোলিয়াম সমৃদ্ধ কাতার জ্বালানি আমদানির ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ উৎস। এসব কারণে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির এই সফরকে ‘বিনিয়োগের সম্ভাবনা’ হিসেবেই দেখছে সরকার। দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বাংলাদেশে ইকোনমিক জোন করে দেওয়ার জন্য কাতারের আমিরের কাছে প্রস্তাব রাখা হবে বলে আগেই জানিয়েছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। গত দুই দশকের মধ্যে কাতারের কোনো আমিরের বাংলাদেশে এটিই প্রথম সফর। সবশেষ ২০০৫ সালে কাতারের তখনকার আমির হামাদ বিন খলিফা আল থানি বাংলাদেশে এসেছিলেন।

 

Please Share This Post in Your Social Media

আরো খবর
© All rights reserved ©2021  Daily Andoloner Bazar
Site Customized By NewsTech.Com