ঢাকা অফিস ॥ দেশের বিস্তীর্ণ এলাকায় চলমান তাপপ্রবাহে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠলেও শিগগিরই কোনো সুখবর মিলছে না। আগের দুইদিন থার্মোমিটারে পারদ খানিকটা নিচে নামলেও মঙ্গলবার থেকে ফের তাপমাত্রা বাড়ার আভাস রয়েছে। সেইসঙ্গে চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে ঢালাওভাবে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি কিংবা গরম কমারও কোনো সম্ভাবনা দেখছেন না আবহাওয়াবিদ তরিফুল নেওয়াজ কবির। মঙ্গলবার তিনি বলেন, “আজকে তাপমাত্রা বাড়বে। সামনে এ ধারাটা অব্যাহত থাকবে। এই মাসের মধ্যে ঢালাওভাবে বৃষ্টি বা গরম কমার কোনো সম্ভাবনা নেই।” চলমান তাপপ্রবাহের মধ্যেই সোমবার আরো তিন দিনের সতর্কবার্তা জারি করেছে আবহাওয়া অফিস। আবহাওয়ার সবশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, “দেশের ওপর দিয়ে চলমান মৃদু থেকে তীব্র ধরনের তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। বাতাসে জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বাড়তে পারে।” চলতি মৌসুমে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় শনিবার; সেদিন যশোরে থার্মোমিটারের পারদ উঠেছিল ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। আর ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রোববার তাপমাত্রা সামান্য কমলেও তাপপ্রবাহের বিস্তার বেড়ে ছড়ায় ৫১ জেলায়। রোববার চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সোমবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা আরো কমে। এদিন খুলনা, যশোর ও চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। রাজধানীতে রেকর্ড করা হয় ৩৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসে তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম হলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ ধরা হয়। ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম তাপমাত্রাকে বলা হয় মাঝারি এবং ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম তাপমাত্রাকে তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয়। আর তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রির উপরে উঠলে তাকে বলা হয় অতি তীব্র তাপপ্রবাহ। মঙ্গলবারের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রাজশাহী, পাবনা, খুলনা, বাগেরহাট, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কৃষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আর ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার ও রাঙামাটি জেলাসহ ঢাকা, রংপুর ও বরিশাল বিভাগ এবং রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি মাত্রার তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। “সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বিরাজ করতে পারে।” মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় দমকা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। বিক্ষিপ্তভাবে কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টি হতে পারে। দেশের অন্য এলাকায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। প্রচ- গরমে হাঁসফাঁস অবস্থার মধ্যে গত কয়েক দিনে বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। হিট স্ট্রোকে তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে চিতিৎসকদের ধারণা। তীব্র গরমের কারণে স্কুল-কলেজে সাত দিনের ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে ক্লাস চালানোর সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে।