1. admin@andolonerbazar.com : : admin admin
  2. andolonerbazar@gmail.com : AndolonerBazar :

যুক্ত হবেন ২০ লক্ষাধিক দরিদ্র মানুষ : আগামী বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে ১ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের পরিকল্পনা

  • সর্বশেষ আপডেট : সোমবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৪

 

 

ঢাকা অফিস ॥ আগামী (২০২৪-২৫) বাজেটে ২০ লাখ ২৬ হাজার দরিদ্র মানুষকে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় যুক্ত করার কথা ভাবছে সরকার, যারা এ মুহূর্তে অন্য কোনও ধরনের ভাতা ও খাদ্যসহায়তা পাচ্ছেন না। এ জন্য ১ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। নতুন কর্মসূচিতে বয়স্ক ভাতাভোগীর সংখ্যা দুই লাখ, বিধবা ভাতাভোগীর সংখ্যা দুই লাখ, প্রতিবন্ধীর সংখ্যা তিন লাখ ৩৪ হাজার, মা ও শিশু সহায়তা উপকারভোগীর সংখ্যা দুই লাখ ৬০ হাজার, হিজড়া সম্প্রদায় উপকারভোগীর সংখ্যা ১২ হাজার ২২৯ এবং চিকিৎসা-সহায়তা দেওয়ার জন্য জটিল রোগে আক্রান্ত, এমন ২০ হাজার জনকে যুক্ত করার কথা ভাবছে সরকার। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সম্মতি পেলে তা আগামী বাজেটে প্রস্তাব করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। জানা গেছে, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এসব পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে, যা ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে কার্যকর করা হবে। ইতোমধ্যে বৈঠকে অংশ নেওয়া সবার মতামত যুক্ত করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সারসংক্ষেপ পাঠানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মতামত চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে। উল্লেখ্য, প্রতি বছরই বাজেটের আগে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি বৈঠক করে। বৈঠকে এর আওতা ও ভাতা বাড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পদাধিকারবলে অর্থমন্ত্রী এই কমিটির সভাপতি। কমিটিতে আরও ৯ জন মন্ত্রী রয়েছেন। তিন মাস পরপর কমিটি এই বৈঠক করে। চলতি এপ্রিলে সর্বশেষ বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন রিমি, যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণসচিব কামরুল হাসান প্রমুখ। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চলমান মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায় এ বছরের বাজেটে নতুন করে আরও ২০ লাখ ২৬ হাজার দরিদ্র মানুষকে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় আনার প্রস্তাব করা হচ্ছে। নতুনভাবে যুক্ত দরিদ্র জনগোষ্ঠী বর্তমানে অন্য কোনও ধরনের ভাতা ও খাদ্যসহায়তা পাচ্ছেন না। এর মধ্যে অতিদরিদ্র ১০ লাখ ২৬ হাজার জন বিভিন্ন ভাতার আওতায় আসবেন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির মুখে ওএমএসসহ খাদ্যসহায়তা কর্মসূচিতে যুক্ত করার কথা ভাবছে বাকি ১০ লাখ মানুষকে। পাশাপাশি দেশের সব শারীরিক প্রতিবন্ধীকে ভাতার আওতায় আনা হবে, যা আগামী (২০২৪-২৫) বাজেটে কার্যকর করা হবে। সূত্র জানায়, আগামী অর্থবছরে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে মোট বরাদ্দ ১ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে রাখার পরিকল্পনা করছেন সংশ্লিষ্টরা। চলতি অর্থবছরে (২০২৩-২৪) এ খাতে মোট বরাদ্দ রাখা হয় এক লাখ ২৬ হাজার ২৭২ কোটি টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এক লাখ ১৩ হাজার ৫৭৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। দেশে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী খাতের আওতায় ১২৩টি কর্মসূচি বা বিষয় রয়েছে। এগুলো বাস্তবায়নের দায়িত্ব পালন করছে ২৪টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ। এগুলোর মধ্যে আটটি কর্মসূচি হচ্ছে নগদ ভাতা, আর ১১টি খাদ্যসহায়তা। অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এবারের বাজেটে উপকারভোগীর সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি ভাতার পরিমাণও বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পাঁচ হাজার টাকা এবং যারা ৯০ বছরে পা রেখেছেন, তাদের বয়স্ক ভাতার পরিমাণ ৫০০ থেকে বাড়িয়ে এক হাজার টাকা নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে দরিদ্র মা ও শিশু সহায়তা ভাতার পরিমাণও বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। জানা গেছে, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিসংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য মাসিক সম্মানি ৩০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করেছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। এর আগে ২০২১ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি বাড়ানো হলে এরপর তা আর বাড়েনি। বর্তমানে দুই লাখ মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবার এ ভাতা পাচ্ছেন। নতুন করে ৬ লাখ ৯৯ হাজার বয়স্ক ব্যক্তিকে এ সুবিধার আওতায় আনার কথা বলা হয়। এ ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ব্যয় প্রাক্কলন করা হয় ৫০৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা। বৈঠকে নতুন দুই লাখ উপকারভোগী বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতে মোট উপকারভোগীর সংখ্যা ৬০ লাখে উন্নীত করা হয়। সাধারণ বয়স্ক ভাতা ৬০০ টাকা অপরিবর্তিত থাকছে। এ ছাড়া বিধবা ও স্বামী নিগৃহীত নারী ভাতাভোগীর সংখ্যা দুই লাখ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয় বৈঠকে। ফলে দেশে এ কর্মসূচিতে মোট উপকারভোগীর সংখ্যা দাঁড়াবে ২৭ লাখ ৭৫ হাজারে। এ ক্ষেত্রে ভাতার অঙ্ক বিদ্যমান ৫৫০ টাকা বহাল থাকবে।

মা ও শিশুসহায়তা কর্মসূচির আওতায় ২০ শতাংশ এবং ভাতার অঙ্ক ১০০ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ১৩ লাখ ৪ জন এ সুবিধা পাচ্ছেন। আগামী অর্থবছরে এ কর্মসূচিতে নতুন মুখ যুক্ত হবে দুই লাখ ৬০ হাজার। ফলে মা ও শিশু সহায়তার উপকারভোগী দাঁড়াবে ১৫ লাখ ৬৪ হাজারে। পাশাপাশি এ কর্মসূচির ভাতার পরিমাণ ৫০০ থেকে বেড়ে এক হাজার টাকা হচ্ছে। কোনও প্রতিবন্ধী ভাতার বাইরে থাকবে না। প্রতিবন্ধীদের শতভাগ ভাতার আওতায় আনতে ভবিষ্যতে ৩ লাখ ৩৪ হাজার জনকে নতুন যুক্ত করা হবে। বর্তমানে এ সুবিধা পাচ্ছেন ২৯ লাখ জন। ভবিষ্যতে এ সংখ্যা দাঁড়াবে ৩২ লাখ ৩৪ হাজারে। অতিরিক্ত মুখ যুক্ত হওয়ায় সরকারের বছরে ব্যয় হবে ৩ হাজার ৩২১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। হিজড়া, বেদে ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে ভাতা কর্মসূচির আওতায় আরও ১২ হাজার ২২৯ জনকে আনা হচ্ছে। এতে এ খাতে সুবিধাভোগীর সংখ্যা ৬৫ হাজার থেকে বেড়ে ৭৭ হাজার ২২৯ জনে উন্নীত হবে। এ ছাড়া ক্যানসার, কিডনি, লিভার সিরোসিস, স্ট্রোকে পক্ষাঘাতগ্রস্ত ও জন্মগত হৃদরোগীদের জন্য আর্থিক সহায়তা কার্যক্রমও চলমান থাকবে। এ খাতে আরও ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়। আর্থিক সুবিধা বাড়িয়ে আরও ২০ হাজার রোগীকে সহায়তা দেওয়া হবে।

 

Please Share This Post in Your Social Media

আরো খবর
© All rights reserved ©2021  Daily Andoloner Bazar
Site Customized By NewsTech.Com