কুমারখালী প্রতিনিধি ॥ মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই নির্দেশিকার শর্তসমূহ লঙ্ঘন করে স্বজনপ্রীতি ও মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে যাচাই-বাছাই সম্পন্ন করে ১১১ জনের মধ্যে মাত্র ১১ জনকে গেজেটভূক্তি করার অভিযোগ উঠেছে। প্রকাশিত ১১ জনের গেজেট বাতিলের দাবিতে গতকাল সোমবার (২৫ মার্চ) সকালে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলা পরিষদের প্রবেশপথে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী দাঁড়িয়ে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেন গেজেট বঞ্চিত মুক্তিযোদ্ধারা। সেখানে বক্তব্যে বঞ্চিত মুক্তিযোদ্ধারা এমন অভিযোগ করেন। মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলনে বঞ্চিত বীর মুক্তিযোদ্ধা নওয়াব আলীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আঃ আজিজ, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম। তাঁরা জানান, ২০২২ সালের ৫ জানুয়ারী জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল কর্তৃক মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই নির্দেশিকা -২০১৬’ অনুযায়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা যাচাই – বাছাই কমিটি গঠন করে। যাচাই -বাছাইয়ে অনলাইন ও সরাসরি ৩৮৫ জন অংশগ্রহণ করে। তাঁদের মধ্যে ১১১ জনকে কমিটির সম্মতিক্রমে ‘ক’ তালিকাভুক্ত করে গেজেটভূক্তির জন্য জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের মহাপরিচালকের কাছে সুপারিশ পাঠানো হয়। এরপর ২০২৩ সালের ২৯ আগষ্ট জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল ‘ক’ তালিকাভুক্তিদের জামুকা প্রতিনিধি কর্তৃক পুনঃযাচাই-বাছাইয়ের নির্দেশ দেয় এবং ২০২৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়া সার্কিট হাউজে যাচাই-বাছাই কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু ওই যাচাই-বাছাইয়ে নির্দেশিকার শর্ত লঙ্ঘন করে স্বজনপ্রীতি ও মোটা অংকের অর্থ লেনদেন করে যাচাই-বাছাই সম্পন্ন করা হয় এবং ওই বছরের ২৭ ডিসেম্বর ১১১ জনের মধ্যে মাত্র ১১ জনকে গেজেটভূক্তি করে মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে তালিকা প্রকাশ করা হয়। তাঁরা আরো জানান, দালাল কর্তৃক মোটা অংকের অর্থ প্রদানের জন্য তাঁদের বিভিন্নভাবে অবহিত করলেও তাঁরা অর্থ দিতে ব্যর্থ হয়েছে। সেজন্য ‘মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই নির্দেশিকা-২০১৬’ এর নির্দেশিত শর্তসমূহ পূরণ করার পরেও প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভূক্তি থেকে বাদ পড়েছেন। সেজন্য সরেজমিন সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক প্রকাশিত ১১ জনের গেজেট বাতিল করে ‘ক’ তালিকাভুক্ত ১১১ জনের গেজেট প্রকাশের দাবি জানান তাঁরা। এবিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য সচিব ও ইউএনও মো. মাহবুবুল হক জানান, তাঁরা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী যাচাই-বাছাই করে প্রেরণ করেছিলেন। কিন্তু গেজেটভূক্তির বিষয়ে ইউএনও’র কোনো হাত নেই। তবে তিনি বঞ্চিত মুক্তিযোদ্ধাদের স্মারকলিপি পেয়েছেন। যা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রেরণ করবেন।