1. admin@andolonerbazar.com : : admin admin
  2. andolonerbazar@gmail.com : AndolonerBazar :

রমজানুল মোবারক: সহি ব্যবসা সর্বোত্তম ইবাদত

  • সর্বশেষ আপডেট : রবিবার, ২ এপ্রিল, ২০২৩

 

 

আ.ফ.ম নুুরুল কাদের ॥ আল¬াহ সোবহানাহু তায়ালা ব্যবসাকে হালাল করেছেন। রাসূল সা: বলেছেন- মানুষ নিজ হাতে হালাল ব্যবসায়ের মাধ্যমে যা উপার্জন করে তা-ই সবচেয়ে পবিত্র। রাসূল সা: আরো বলেছেনÑ ইবাদত কবুলের শর্ত হচ্ছে হালার রিজিক। আমরা এই হালাল রিজিক আর পবিত্র উপার্জনকে তাকওয়া বা আল¬াহভীতির অভাবে হারাম বা অপবিত্র করে ফেলি। বছর ঘুরে প্রতিবারই আসে মাহে রমজানের সিয়াম, আর হু হু করে বৃদ্ধি পায় নিত্যপণ্যের দাম! যা কিনা রমজান ও সিয়ামের উদ্দেশ্যের বিপরীত। ব্যবসা হালালঃ সূরা বাকারার ২৭৫ নম্বর আয়াতে আল¬াহ রাব্বুল আলামিন ঘোষণা করেছেন, আর আল¬াহ ব্যবসাকে হালাল করেছেন। সূরা নিসার ২৯ নম্বর আয়াতে ঘোষণা করা হয়েছে, হে ঈমানদারগণ তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করো না, কেবল তোমাদের (ক্রেতা-বিক্রেতার) পরস্পরের সম্মতিক্রমে যে ব্যবসা করো তা বৈধ। ব্যবসা হালাল হওয়ার শর্ত হচ্ছে, ক্রেতা ও বিক্রেতা পরস্পরের মধ্যে ব্যবসা হারাম : সূরা নিসার ২৯ নম্বর আয়াতের ঘোষণা অনুযায়ী, (হে ঈমানদারগণ তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করো না, কেবল তোমাদের (ক্রেতা-বিক্রেতার) পরস্পরের সম্মতিক্রমে যে ব্যবসা করো তা বৈধ।) অন্যায় ও অবৈধভাবে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি করে ভোক্তার কাছ থেকে অধিক মূল্য গ্রহণ করারই হচ্ছে সে  ভোক্তার সম্পদ অবৈধভাবে ভক্ষণ করা। এটা ব্যবসায়ের জন্য হারাম। সূরা মোতাফফিফিনের ১-৩ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘ধ্বংস তাদের জন্য যারা (অধিক মুনাফার জন্য) মাপে কম দেয়। তাদের অবস্থা এই যে, লোকদের থেকে নেয়ার সময় পুরোমাত্রায় নেয় এবং ওজন করে বা মেপে দেয়ার সময় কম  দেয়।’ ব্যবসা সর্বোত্তম ইবাদত : সূরা নুরের ৩৭ আয়াতে ঘোষণা করা হয়েছে, ‘যারা ব্যবসায় ও  বেচাকেনার ব্যস্ততার মধ্যেও আল¬াহর স্মরণ এবং সালাত কায়েম ও জাকাত আদায় করা থেকে গাফিল হয় না, তারা সেদিনকে ভয় করতে থাকে যেদিন হৃদয় বিপর্যস্ত ও দৃষ্টি পাথর হয়ে যাওয়ার উপক্রম হবে।’ সূরা জুম’আর ৯ ও ১০ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘হে ঈমানদাগণ, জুমা’র দিন যখন তোমাদের সালাতের জন্য ডাকা হয়, তখন আল¬াহর জিকিরের দিকে ধাবিত হও এবং বেচাকেনা ছেড়ে দাও, এটাই  তোমাদের জন্য বেশি ভালো যদি তোমরা বুঝো। তারপর যখন সালাত শেষ হয়ে যায় তখন ভূপৃষ্ঠে ছড়িয়ে পড়ো এবং আল¬াহর অনুগ্রহ তালাশ করো এবং অধিক মাত্রায় আল¬াহকে স্মরণ করতে থাকো, আশা করা যায় তোমরা সফলকাম হবে।’ তাকওয়াহ অর্জনের জন্য সিয়াম: সিয়াম ফরজ করার উদ্দেশ্য সম্পর্কে সূরা বাকারার ১৮৩ নম্বর আয়াতে ঘোষণা করছেন, ‘হে ঈমানদাগণ! তোমাদের ওপর সিয়াম ফরজ করে দেয়া হয়েছে, যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীগণের ওপর ফরজ করা হয়েছিল, এ থেকে আশা করা যায় যে, তোমাদের মধ্যে তাকওয়ার বা আল¬াহভীতির গুণাবলি সৃষ্টি হবে।’ ‘সিয়াম’ শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে, বিরত থাকা, পরিত্যাগ করা বা অসৎ প্রবৃত্তিকে দমন করা। সিয়াম পালনের মাধ্যমে আল¬াহ সোবহানাহু ওয়া তায়ালা সাধারণত নিষিদ্ধ (বস্তু) কাজ, কথা ও অসৎ প্রবৃত্তি থেকেই বিরত থাকতে নির্দেশ করেছেন। সিয়ামের কাজ হচ্ছে মানুষের মধ্যে আল¬াহর ভয় সৃষ্টি করা। সিয়াম পালনের মাধ্যমে আমরা যদি আল¬াহর ভয়ে নিষিদ্ধ কাজ, কথা ও অসৎ প্রবৃত্তি থেকেই বিরত থাকতে না পারি তাহলে বুঝতে হবে, রমজানের সিয়াম আমার কোনো কাজে আসেনি। অথচ জিবরাইল আ: রমজানের কোনো এক জুমা’য় দোয়া করছিলেন, হে আল¬াহ! যে ব্যক্তি রমজান মাস পেল, কিন্তু তার গুনাহ থেকে ক্ষমা পেল না, সে ধ্বংস হোক। রাসূল সা: বলছিলেন, আমিন।’ এমন দোয়া তো ব্যর্থ হওয়ার কথা নয়। অতএব, রমজানের সিয়ামের ফজিলত হাসিল করতে হলে আল¬াহ তায়ালার পক্ষ  থেকে সব নিষিদ্ধ কাজ থেকে আমাদের বিরত থাকতে হবে। আল¬াহর বান্দাদের কোনোভাবেই কষ্টে  ফেলা যাবে না, ধোঁকা দেয়া যাবে না, প্রতারণা করা যাবে না, কোনোভাবেই ঠকানো যাবে না। এটাই মানুষের স্বভাব। আপনি ব্যবসা করছেন, অধিক মুনাফার জন্য ভাইকে ঠকাচ্ছেন! আপনি ভাইকে ঠকিয়ে সম্পদশালী হচ্ছেন আর আপনার ভাই নিঃস্ব হচ্ছে। আপনি কিভাবে মুসলিম হবেন? আগে তো ঈমানদার হতে হবে। ভাবেন তো আপনি কি ঈমানদার হতে পেরেছেন ? ব্যবসায়ে আনন্দ উৎসবে মুসলিম-অমুসলিমের মধ্যে পার্থক্য : আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতের বেশির ভাগ জনগণ হিন্দু। তাদের বিভিন্ন আনন্দ উৎসব বা পূজা পার্বণে বিশেষ করে দুর্গাপূজা, রথযাত্রা বা দিপাবলি ইত্যাদিতে  সে দেশের ব্যবসায়ীরা কখনোই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে না বরং সব দ্রব্যসামগ্রীর ওপর ২৫ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়  দেয়। সারা বিশে^ ২৫ ডিসেম্বর খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের বড়দিন বা ক্রিসমাস ডে উপলক্ষে আমেরিকা, ব্রিটেন, কানাডা, অষ্ট্রেলিয়াসহ উন্নত দেশগুলোর ব্যবসায়ীরা দ্রব্যমূল্যে ছাড় দেয়  সে সব দেশের সরকার ও এ ব্যাপারে সার্বিক সহযোগিতাসহ আইনেও শিথিলতা প্রদর্শন করে, এমনকি তাদের আনন্দ উৎসবে যোগদানের জন্য বিদেশীদের ভিসা প্রদানেও সহজ করে থাকে। যে কাজটা মুসলমানরা সিয়াম ও ঈদ উপলক্ষে করার কথা সে কাজটা আজ অমুসলিমরা করছে, যা বলতেও লজ্জার ব্যাপার। তারপরও মুসলমান হিসেবে আমাদের কোনো বোধোদয় হচ্ছে না। আর এটা হচ্ছে তাকওয়াহ বা আল¬াহভীতির অভাবে। মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় সব দেশের ব্যবসায়ীরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল আর সে সব  দেশে আইনের শাসনও আছে, ফলে কখনোই কোনো উৎসব বা উপলক্ষে বিশেষ করে সিয়াম ও ঈদকে  কেন্দ্র করে রাতারাতি হু হু করে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেতে দেখা যায় না।

 

Please Share This Post in Your Social Media

আরো খবর
© All rights reserved ©2021  Daily Andoloner Bazar
Site Customized By NewsTech.Com