1. admin@andolonerbazar.com : : admin admin
  2. andolonerbazar@gmail.com : AndolonerBazar :
শিরোনাম :
‘গাজার কারণেই আমাদের বিক্ষোভ’ প্রার্থী নয় অপরাধ দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে: ইসি রাশেদা শনিবার বন্ধ প্রাথমিক; তাপদাহে যেভাবে চলবে ক্লাস ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে কেন কিছু দেশ স্বীকার করে না? থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বিএনপি গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে: ওবায়দুল কাদের ৪৩ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম কালবৈশাখী এপ্রিলে কুষ্টিয়া শহরের থানাপাড়ায় আনারস প্রতীকের পক্ষে আওয়ামী লীগের পথসভা সুন্দরম ললিত কলা একাডেমি কুষ্টিয়ার আয়োজনে ২ দিনব্যাপী হারানো দিনের গানের অনুষ্ঠান “সুরের সুরভী” জুনিয়াদহে এ্যাডো’র আয়োজনে ফ্রি স্বাস্থ্য ক্যাম্প অনুষ্ঠিত

অল্প জায়গায় বেশি লাভ ভেড়া পালনে

  • সর্বশেষ আপডেট : শনিবার, ৩ জুন, ২০২৩

 

কৃষি প্রতিবেদক ॥ সাধারণত আমরা প্রাণিসম্পদ বলতে গরু, ছাগল এবং মুরগি ইত্যাদিকে বুঝি। কিন্তু গরু, ছাগল, মহিষ, হাঁস, মুরগি, কবুতর এবং ভেড়াও প্রাণিসম্পদের অংশ এবং গৃহপালিত প্রাণী। ভেড়া পালনে লাভ বেশি, অল্প জায়গা লাগে। ভেড়ার উৎপাদন বেশি হলেও পালনের সম্ভাবনা নিয়ে খুব একটা আলোচনা হয় না। জানা গেছে, জাতীয় আয় ও সংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশে প্রাণিসম্পদের মধ্যে চতুর্থ স্থান অধিকারীর ভেড়া অত্যন্ত কষ্টসহিষ্ণু। এছাড়া প্রতিকূল পরিবেশে শুকনো খড় এবং শস্যের অবশিষ্ট খেয়েও জীবনধারণ করতে পারে। খামার পরিচালনায় খাদ্য খরচ অনেক কম। প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশের অনেক জেলায় ভেড়া পালনের সম্ভাবনা বেশি। যেসব জায়গায় পতিত জমি থাকে, বন-জঙ্গল আছে, সেখানে পালনের সুবিধাও বেশি। পৃথিবীর সব  দেশেই গৃহপালিত পশু হিসেবে ভেড়া পালন করা হয়। আমাদের দেশেও আদিকাল থেকে কিছু ভেড়া পালন করা হচ্ছে সত্য কিন্তু তেমন উলে¬খযোগ্য সংখ্যক এ দেশে নেই।

নোয়াখালী, ফরিদপুর, দিনাজপুর, রংপুর, রাজশাহী এবং উপকূলীয় জেলাসমূহে  ভেড়া দেখা যায়। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের খামার বিভাগ সূত্রে জানা যায়, একটি প্রাপ্তবয়স্ক ভেড়ার ওজন ১৫ থেকে ২০ কেজি হতে পারে। প্রতিটি ভেড়া থেকে বছরে গড়ে এক থেকে দেড় কেজি পশম পাওয়া যায়। যা দিয়ে উন্নত মানের শীতবস্ত্র হয়।  ভেড়া উৎপাদন বাড়ার হার শতকরা ১২ ভাগ। যা গরু, ছাগল ও মহিষের চেয়ে অনেক বেশি। এদের বাসস্থানের খরচও কম। নরম, রসাল ও সুস্বাদু ভেড়ার মাংসে আমিষের পরিমাণ গরু ও ছাগলসহ অন্যদের চেয়ে  বেশি। ভেড়ার মাংসে জিঙ্ক, আয়রন এবং ভিটামিনের পরিমাণ বেশি এবং চর্বি ও কোলস্টেরল কম। যদিও ভেড়া একটি বহুমুখী ব্যবহার উপযোগী  প্রাণী, তারপরও বলা প্রয়োজন ভেড়া একটি অবহেলিত এমনকি বিলুপ্ত প্রাণী হিসেবেও অনেকের কাছে পরিচিত। অথচ তিন দশক আগেও এদেশে ভেড়া পালন করা ও তার মাংস বিক্রির রেওয়াজ ছিল। হঠাৎ করে ভেড়া দিনে দিনে যেন বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। ভেড়া দলবদ্ধভাবে থাকতে পছন্দ করে। এ কারণে গরুর সঙ্গে অতিরিক্ত জনবল ছাড়াই ভেড়া পালন সম্ভব। ভেড়া পালনের বড় সুবিধাটি হলো, গরুর সঙ্গে একই খামারে বা ঘরে ছাগল পালন করা যায় না কিন্তু অতি সামান্য খরচ ও সহজ পরিচর্যায় ভেড়া পালন করা যায়। চর এলাকার বাথানে, উপকূলে এবং হাওরাঞ্চলের চারণভূমিতে প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত কাঁচা ঘাস খাইয়ে অল্প খরচে বৎসরের শুকনো  মৌসুমসহ প্রায় সব সময়ই ভেড়া পালন করা সম্ভব। কম খরচ আর অধিক লাভজনক হওয়ায় গ্রামাঞ্চলের মানুষ ভেড়ার খামারের দিকে ঝুঁকছেন। অন্য প্রাণীর চেয়ে এই প্রাণীর লালনপালন খরচ  ও রোগব্যাধি কম হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে ভেড়া পালনের ব্যাপক সুযোগ-সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশে।

ভেড়ার খামার গড়ে তুলে বেকারত্ব মোচন বা আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাবে সারা দেশে তিন হাজার ৬৩২টি  ভেড়ার নিবন্ধিত খামার রয়েছে। এর বাইরেও অনেকে অল্প পরিসরে দু-চারটি বা ১০  থেকে ২০টি করে ভেড়া লালনপালন করছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মতে, দেশের উত্তর-দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ব্যাপকভাবে গড়ে উঠেছে ভেড়ার খামার। তুলনামূলক কম পুঁজিতে গড়ে তোলা ২০-৩০টি ভেড়ার একটি খামারে বছরে আয় ৫০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকা। বিদেশে ভেড়ার মাংস ও পশমের চাহিদা অনেক বেশি। দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানিরও সুযোগ রয়েছে। প্রকল্প কর্মকর্তারা আশা করছেন, ৬৪  জেলার ৪৮০ উপজেলায় এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের আগ্রহী প্রায় ছয় হাজার খামারিকেও দেওয়া হয়েছে প্রশিক্ষণ। খামারিদের মধ্যে বাড়ন্ত ভেড়ি বিতরণ করা হলে মানুষ সহজেই ভেড়ার খামারে আরো  বেশি উৎসাহী হবে। ভেড়া সাধারণত দলবেঁধে চড়ে বেড়ায়। রাতে খোঁয়াড়ে আসে। এরা সারা দিন বাড়ির আশপাশে, মাঠ-ঘাটে চড়ে নিকৃষ্ট জাতের ঘাস, খড়কুটো, জমির ফসল কাটার পর পরিত্যক্ত খড়, আগাছা খেয়ে জীবনধারণ করতে পারে, যা অন্য  কোনো প্রাণী দিয়ে সম্ভব হয় না। ভেড়ার জন্য গরু-মহিষের মতো তত বড় চারণভূমির প্রয়োজন হয় না। গরু-মহিষের মতো বিপুল খাদ্যের প্রয়োজন হয় না। বাড়ির আশপাশের বা  ক্ষেতের আইলের বা পুকুরপাড়ের নিকৃষ্ট ঘাস, গাছ-গাছড়ার পাতা, লতা-গুল্ম দিয়ে এদের খাদ্যের প্রয়োজন মেটাতে পারে। তাই কৃষিজমির ওপর চাপ সৃষ্টি না করে অল্প জায়গাতেই প্রতিটি পরিবারে কয়েকটি ভেড়া পালন করে আমাদের প্রাণিজ আমিষের প্রয়োজন মেটানো যায়।

গরু-মহিষের তুলনায় ছাগল পালনের মতোই ভেড়া পালনে বহুবিধ সুবিধা রয়েছে। ভেড়া পালনে গরু-মহিষের মতো মোটা অঙ্কের মূলধন বা পুঁজি বিনিয়োগ করতে হয় না। অল্প পুঁজিতে অল্প জায়গায় কয়েকটি ভেড়া পালন করে অল্প সময়ে অধিক লাভবান হওয়া যায়। ভূমিহীন, প্রান্তিক চাষি, বেকার যুবক, দুস্থ মহিলা এমনকি স্কুলের ছাত্রছাত্রী যারা বেশি পুঁজি  জোগাড় করতে পারে না, তারা ভেড়া পালন করে দ্রুত আয়ের পথ করে নিতে পারে। আমাদের দেশে চারণভূমির যে সমস্যা, তাতে ভেড়া পালনের প্রতি বেশি নজর দিতে হবে। ভারতীয় জাতের ‘গাড়ল’ ভেড়া পালন খুবই লাভজনক। এতে খরচ কম অথচ লাভ বেশি। স্বাদ ও পুষ্টিগুণ বেশি হওয়ায় এর মাংসের চাহিদা ব্যাপক। বাণিজ্যিকভাবে দেশে বেশি গাড়লের খামার হলে মাংসের চাহিদা পূরণ করে বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব হবে। বাংলাদেশের দেশি ভেড়া যাকে বলে ওই ভেড়া আর গাড়ল দেখতে প্রায় একই রকমের। তবে ভেড়ার লেজ ছোট, ছাগলের লেজের মতো; আর গাড়লের লেজ লম্বা হয় গরুর লেজের মতো। গাড়লকে আবার অনেকে কাশ্মীরি ভেড়া বলেও ডাকে। গাড়ল ২-৩ জাতের আছে। পিওর গাড়ল,  ভেড়া আর গাড়লের ক্রস এবং ক্রস গাড়লের ক্রস ইত্যাদি। পিওর গাড়লের   লেজ প্রায় মাটিতে লেগে থাকে এবং আকারে বড় হয়। বাংলাদেশের কুষ্টিয়া, মেহেরপুরসহ কিছু জায়গায় গাড়ল বেশি পাওয়া যায়। তাছাড়া বাণিজ্যিকভাবে দেশের বিভিন্ন জেলায় ছোট-বড় কিছু কিছু গাড়লের খামার গড়ে উঠছে।

 

Please Share This Post in Your Social Media

আরো খবর
© All rights reserved ©2021  Daily Andoloner Bazar
Site Customized By NewsTech.Com